বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে ‘সুরক্ষিত বিশ্ব, নিশ্চিত স্বাস্থ্য’ প্রতিপাদ্য নিয়ে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য নৌ র‍্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার(৭ এপ্রিল) সকালে কামরাঙ্গীরচর বেড়ীবাঁধে শেখ জামাল সরকারি হাই স্কুল ঘাটে ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ’র সার্বিক সহযোগিতায় ব্যাতিক্রমি এ নৌ র‍্যালীর আয়োজন করেন নিরাপদ চিকিৎসা চাই(নিচিচা) কেন্দ্রীয় কমিটি।

র‍্যালী পরবর্তি অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশে সকল মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার কথা বলতে গেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথা অবশ্যই উল্লেখ করতে হয়। বঙ্গবন্ধু স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যকে সংবিধানের মূল অধিকারের অংশ হিসেবে সংযোজন, প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যকে গুরুত্বদান, গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, চিকিৎসকদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রদান, বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ গঠন ইত্যাদি। জাতির পিতার চিন্তাচেতনা বহু গুণে অ্যাডভান্স ছিল।

বঙ্গবন্ধু প্রতিটি গ্রাম বা ওয়ার্ডে একজন স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োজিত রাখার কথা বলেছিলেন, যার কাজ হলো প্রতিটি বাড়ি ঘুরে ঘুরে মানুষের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেওয়া। অসুস্থ লোক থাকলে তাকে চিহ্নিত করে ইউনিয়ন সাব-সেন্টারে নিয়ে যাওয়া। বঙ্গবন্ধুর আমলে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার ইউনিয়নে সাব-সেন্টারসমূহ ও থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসমূহ যাতে নির্ধারিত সময়ের (১৯৭৮) মধ্যেই তৈরি হয়, সেভাবেই পরিকল্পনা করেছিলেন। কারণ ইউনিয়নে সাব-সেন্টারসমূহ ও থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসমূহ যথাসময়ে তৈরি হলে দেশের সব মানুষকে চিকিৎসাসেবার আওতায় আনা সম্ভব হবে। বঙ্গবন্ধু শুধু দেশকে প্রতিষ্ঠা ও শক্রমুক্ত করে যাননি; মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদা—অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু কতটা জনকল্যাণমুখী ছিলেন বর্তমান সময়েও আমরা তা ভেবে অবাক হয়ে যাই।

বঙ্গবন্ধুর কনসেপ্ট বা চিন্তা ও ধ্যানধারণা নিয়েই আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক খুলেছেন। এ কারণেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করার চেষ্টা করছি। মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে দেশের সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্যস্বাধীন দেশে তৃণমূল পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা প্রবর্তন করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরেই দেশের সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে তৎকালীন মহকুমা ও থানা পর্যায়ে স্বাস্থ্য অবকাঠামো গড়ে তুলেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেই দেশব্যাপী প্রতি ৬ হাজার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি করে মোট ১৮ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কমিউনিটি ক্লিনিকে কোভিড ভ্যাকসিন প্রদানসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টিসেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এটি সরকার ও জনগণের সম্মিলিত অংশীদারিত্বের একটি সফল কার্যক্রম, যার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা এবং স্থায়িত্বের লক্ষ্যে সরকার ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন’ পাশ করেছে। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সারা দেশের প্রান্তিক জনগণের স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টি সেবাসহ বিনা মূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে।

প্রকৃতপক্ষে, বঙ্গবন্ধুর পথ ধরেই জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের মেডিক্যাল শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা ও গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। দেশে বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা পাঁচটি, সরকারি মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা ৩৮টি, এর মূলে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার অবদান।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাংসদ নাদিরা ইয়াসমিন জলি এমপি। উদ্ভোধক ছিলেন ক্যাট সভাপতি ও স্মার্ট বাংলাদেশ উন্নয়ন ভাবনা’র সম্পাদক আলী নিয়ামত, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার(পিবিআই) কুদরত ই-খোদা দীপু, ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ’র প্রেসিডেন্ট ও ক্যান্সার প্রতিরোধ গবেষক সৈয়দ হুমায়ুন কবির, আনসার ভিডিপি ব্যাংকের পরিচালক ড. খান আসাদুজ্জামান। নৌ র‍্যালি আয়োজনটির সভাপতিত্ব করেছেন নিরাপদ চিকিৎসা চাই’র (নিচিচা) চেয়ারম্যান যুবরাজ খান, পরিচালানা করেছেন নিরাপদ চিকিৎসা চাই’র (নিচিচা) মহাসচিব উম্মে সালমা। এছাড়াও নৌ র‍্যালীটিতে অংশগ্রহণ করেছেন ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ’র শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক।

Related Activities

স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতনতায় ‘গোলাপি সড়ক শোভাযাত্রা

সারা দেশে স্তন ক্যান্সার সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্রিয় ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশসহ ৪৭টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রতি বছরের মতো এ বছরও গোলাপি সড়ক শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। বৃহস্পতিবার (৩০...

নিজেই ক্যান্সারে আক্রান্ত, তবুও অন্যদের বাঁচাতে লড়ছেন তিনি

নিজেই ক্যান্সারে আক্রান্ত, তবুও থেমে নেই তার যুদ্ধ। অসুস্থ শরীর নিয়েই অন্যদের ক্যান্সার থেকে বাঁচাতে কাজ করে যাচ্ছেন ড. সৈয়দ হুমায়ুন কবির। নিজের কষ্টার্জিত আয়ের টাকায় তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন মানবতার এই সংগ্রাম। কখনও অসহায় রোগীর ওষুধ কিনে দিচ্ছেন, কখনও আবার ক্যান্সার...

রাজধানীতে গাছ লাগানোর পর নিজেই পরিচর্যা করছেন ড. হুমায়ুন কবির

রাজধানীতে ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের খ্যাতনামা ক্যান্সার গবেষক ও পরিবেশবাদী ড. সৈয়দ হুমায়ুন কবিরের ব্যক্তিগত অর্থায়নে সারাদেশেই এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে...

সারা বাংলাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

দেশের খ্যাতনামা ক্যানসার গবেষক, পরিবেশবাদী ও ওয়ার্ল্ড ক্যানসার সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি ড. সৈয়দ হুমায়ুন কবিরের নিজস্ব অর্থায়নে সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টন, পলওয়ে মার্কেট, রাজারবাগ পুলিশ...

বিশ্ব পরিবেশ দিবসে রাজধানীতে বৃক্ষ র‍্যালি

আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস, পরিবেশ বাঁচানো আমাদের সকলেরই দায়িত্ব। প্রতিবারের মতো এবারও ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ বৃক্ষ রোপণ সহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করেন। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘করবো ভূমি পুনরুদ্ধার, রুখবো মরুময়তা, অর্জন করতে হবে মোদের খরা...

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসে ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশের র‍্যালি

‘তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশের (ডব্লিউসিএসবিডি) আয়োজনে রাজধানীতে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। শনিবার সকাল ৯ টায় ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশের উদ্যোগে একটি...

তিন জন বিশিষ্ট চিকিৎসকের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত

সর্বজন শ্রদ্ধেয় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, বারডেমের ল্যাবরেটরী সায়েন্সের সাবেক পরিচালক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. টিএ চৌধুরী, রাজশাহী ক্যান্সার হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা রোটারিয়ান ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা....

দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশের দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় ২৫ মার্চ ২০২৫ মগবাজারে জলপাই রেস্টুরেন্ট এন্ড পার্টি সেন্টারে। দোয়া ও ইফতার মাহফিল সঞ্চালনা ও সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জনাব সৈয়দ হুমায়ুন কবির। তিনি দোয়া পরিচালনা করেন এবং...

‘নিরাপদ মাতৃত্ব ও শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

লাখো বাঙালির প্রাণের উৎসব অমর একুশে বইমেলায় ক্যান্সার প্রতিরোধ গবেষক ড. সৈয়দ হুমায়ুন কবীরের নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘নিরাপদ মাতৃত্ব ও শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশ’ শিরোনামে বইটি প্রকাশ করেছে অমর প্রকাশনী। বুধবার বিকালে বইমেলা প্রাঙ্গণে গ্রন্থ উন্মোচন মঞ্চে নতুন এ বইটির মোড়ক...

বিশ্ব ক্যান্সার দিবস ২০২৫ পালিত

বিশ্ব ক্যান্সার দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‍্যালি করেছে ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে র‍্যালিটি শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জাতীয় প্রেস ক্লাব গিয়ে শেষ হয়। সংস্থাটির সভাপতি...