ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ’র সভাপতি ও ক্যান্সার প্রতিরোধ গবেষক সৈয়দ হুমায়ুন কবির বলেছেন, দেশে তামাক চাষ বন্ধে এখনি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তামাক থেকে সরকারের যে পরিমাণ রাজস্ব আসে তাঁর চেয়ে বেশি খরচ হয় তামাক জাত দ্রব্য ও ধূমপান করে আমাদের চিকিৎসার পেছনে।তামাক নিয়ন্ত্রন আইন শক্তিশালী করনের মাধ্যমেই এসব ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের ঘোষণা বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
মঙ্গলবার(৩১ মে) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে তামাক বিরোধী বর্ণাঢ্য এক র্যালি পরবর্তী আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, অনুসন্ধানে দেখা গেছে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীরাও অফিসে বসে ধুমপান করছেন।আইন প্রয়োগ করে শাস্তি দিয়ে সরকারকেই এসব বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ খুবই কম। মাত্র তিন কোটি ৭৬ লাখ সাত হাজার একর। অথচ তামাক চাষে ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। বিশ্বের মোট তামাকের এক দশমিক তিন শতাংশই উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। তামাক চাষের কারণে খাদ্য ফসলের জমি ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশে রবি মৌসুমের প্রধান খাদ্য ফসলগুলোর মধ্যে বোরো, গম এবং আলু অন্যতম ও এ মৌসুমেই তামাক চাষ হয়ে থাকে। তামাক চাষ বন্ধ করে সেসব আবাদি জমিতে ফসল ফলাতে হবে।
বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য তামাক নয়, খাদ্য ফলান। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশে পালিত হয়েছে দিবসটি। তামাকের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে তামাক ও মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে, সেবামূলক সংগঠন “ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ (WCSB)” মানুষকে তামাক ও ধূমপান বিষয়ে গণসচেতনতা তৈরীর উদ্দেশ্যে আয়োজন করেছে বর্ণাঢ্য এই র্যালির। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, সেগুনবাগিচা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত ধুমপান ও তামাক বিরোধী সচেতনতামূলক এই র্যালিটির উদ্ভোধক ছিলেন ক্যাট চেয়ারম্যান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান।
তামাক বিরোধী এই আন্দোলনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে তামাকজনিত অসুস্থতায় প্রতি বছর এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। দেশে মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের প্রধান চারটি কারণের একটি তামাক। তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় ও কর্মক্ষমতা হ্রাসের আর্থিক ক্ষতি প্রায় ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। তামাকের এসব ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করেই তামাক নিয়ন্ত্রণকে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের অন্তর্ভুক্ত (টার্গেট ৩এ) করা হয়েছে। কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তামাকের সরবরাহ ও চাহিদা কমিয়ে আনাই হতে পারে তামাকের নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে ওঠার সঠিক উপায়।
র্যালিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ও ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশের
সাধারণ সম্পাদক ডাঃ কামাল হোসেন, দৈনিক বঙ্গ জননী পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি ক্যাট(সভাপতি), মাদক বিরোধী আন্দোলন বাংলাদেশ’র রূপকার আলী নিয়ামত, ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটি বাংলাদেশ’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জীবন কুমার সরকার এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি সালমান খান। এছাড়াও বাংলাদেশ স্কাউটস’র কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সদস্য,বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মি, ডাক্তার, নার্স, ক্যাট, আধুনিক, সাস্ক ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি মার্কেটিং এলামনাই এসোসিইয়েসনের সদস্য বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Recent Comments